শীর্ষনিউজ, যশোর: সরকারী সংস্থা বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কাস্টমস এর সমন্বয়হীনতার কারনে পাসপোর্ট নিয়ে যাত্রী হয়রানি শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সেই সাথে দেশের ভাবমুর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থল বন্দর এবং ভারতে প্রবেশের প্রধান প্রবেশদ্বার এই বেনাপোল চেকপোষ্ট। এ পথে দেশী বিদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারত বাংলাদেশ যাতায়াত করে থাকে। যাত্রীরা এভাবে বার বার তল্লাশি শিকার হতে হয় এখানে। ধাপে ধাপে তল্লাশি না করে একই জায়গায় রাষ্ট্রিয় সকল তদারকি সংস্থা যাত্রীদের তল্লাশি করলে হয়রানি হবে না বলে যাত্রীরা অভিযোগের সুর তুলেছে।
বৈধ পাসপোর্টযাত্রীরা বাংলাদেশ থেকে ভারত যায় এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর ১২ টার সময় দেশের প্রধান প্রবেশদ্বার বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের সামনে দেখা যায় প্রায় দুই শতাধিক যাত্রী পাসপোর্ট নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কথা বলে জানা যায়, তারা কিছু খাদ্য দ্রব্য এবং মসলা জাতিয় পণ্য নিয়ে এসেছিল সেগুলো ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। তাই ফিরে পাবার আশায় দাঁড়িয়ে আছে।
দেখা যায় আইসিপি ক্যাম্পে যাত্রীরা প্রবেশ করছেন এবং তাদের ব্যাগ নিয়ে বের হচ্ছেন। তাদের কাছে কারন জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘বিজিবি আমাদের কাস্টমস থেকে বের হওয়ার পর আন্তর্জাতিক প্যাচেঞ্জার টার্মিনালের সামনে ব্যাগ তল্লাশি করে তাদের লোক দিয়ে ব্যাগ ক্যাম্পে পাঠিয়েছে। এখন একজন একজন করে ব্যাগ দেখছে এবং তাদের ব্যাগ থেকে কিছু পণ্য রেখে তারা আবার কিছু পণ্য দিয়ে তাদের ব্যাগ ফেরত দিয়ে দিচ্ছে।’
তবে তাদের অভিযোগ, যে পণ্য রাখছে তার কোন ডিএম স্লিপ বা মেমো দিচ্ছে না। আরো দেখা যায় ক্যাম্প থেকে পণ্য নিয়ে বের হলে অন্য পাসপোর্ট যাত্রীরা ওই ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করছে। তারা বলছেন, যে আগে ক্যাম্পে যাচ্ছে সে বড় ব্যাগ দেখিয়ে অন্যের ব্যাগ নিয়ে চলে আসছেন। এ নিয়ে হাতাহাতিও ঘটে থাকে।
ভারতীয় যাত্রী মনা অধিকারী (পাসপোর্ট নাম্বার জেড- ৭৬১৫৮১১) বলেন, ‘আমার ব্যাগ কাস্টমস দেখেছে এরপর গোয়েন্দাও দেখেছে কিন্তু তারপর বিজিবির চেকপোষ্ট টার্মিনালের সামনে আসলে ব্যাগ নিয়ে নেয়। এরপর থেকে এখানে দাড়িয়ে আছি। তবে আমি বাংলাদেশে মাঝে মধ্যে পণ্য নিয়ে আসি এবং বিক্রি করে চলে যাই। পাসপোর্ট যাত্রী সুস্মিতা অধিকারী ( জেড- ৮২০৮১৮৩) বলেন আমি মাত্র এদেশে তিনবার এসেছি। আমার কাছে কিছু খাদ্য দ্রব্য ছিল । তা ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। ’
আরেক যাত্রী অনিতা দাস বলেন, ‘আমরা লাগেজ সুবিধার বাইরে কোন পণ্য আনি না। যা কাস্টমস দেখে আমাদের ছেড়ে দেয়। সে পণ্য নিয়ে আবার বাইরে আসলে বিজিবি আমাদের নিকট থেকে ব্যাগ নিয়ে ক্যাম্পে যায়। এর মধ্যে থেকে কিছু দেয় কিছু রেখে দেয় । কোন স্লিপ চাইলে তারা দেয় না।’
এ বিষয় নাম না প্রকাশ করার শর্তে কাস্টমস এর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপুর্ণ জায়গায় তদারকি করি। যে সব যাত্রী যাতায়াত করে তারা মুলত এক রাষ্ট্র থেকে অন্য রাষ্টে আসলে ল্যাগেজ রুল অনুযায়ী আনে যার জন্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অপরদিকে যদি কেউ অধিক পণ্য নিয়ে আসে তা কাস্টমস আটক করে তাদের স্লিপ দেওয়া হয়।’
বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ বিষয় কোন বক্তব্য দিতে পারব না। আর যে সব যাত্রীদের ল্যাগেজ আটক করা হয়েছে তা যাচাই বাছাই করে ল্যাগেজ সুবিধা অনুযায়ী ফেরত দেওয়া হয় এবং বাকিটা আমরা জব্দ করি। এবং ওই পণ্য কাস্টমসে জমা দেওয়া হয়।’
শীর্ষনিউজ/প্রতিনিধি/এ. সাঈদ