১১:৫৩ অপরাহ্ন সোমবার, ১৯-মে ২০২৫

স্বপ্নবাজ শাকিলের ‘রোড টু এভারেস্ট’

প্রকাশ : ১৯ মে, ২০২৫ ০৩:২১ অপরাহ্ন

শীর্ষনিউজ, ঢাকা: 'স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে; স্বপ্ন সেটাই, যেটা পূরণের প্রত্যাশা, মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।’ ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের একটি বিখ্যাত উক্তি যেন মূলমন্ত্র হয়ে কাজ করছে তরুণ শাকিলের মণেপ্রাণে। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে। পায়ে হেঁটে মাত্র ৮৪ দিনে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে পৌছান বাংলাদেশি এই স্বপ্নবাজ তরুণ।

সোমবার দুপুরের দিকে ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে ইকরামুল হাসান শাকিলের অভিযান সমন্বয়কেরা জানিয়েছেন, ‘এইমাত্র খবর পেলাম শাকিল সামিট করেছে এবং সুস্থ আছে। ক্যাম্প ৪–এ নেমে এসেছে। নেটওয়ার্ক না থাকায় বিস্তারিত তথ্য এখন দেয়া যাচ্ছে না।’

১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ৯৬ দিনে প্রায় ১২শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পদচিহ্ন রাখেন। শাকিল তার যে সপ্তাহখানেক কম সময়ে পাড়ি দিয়েছেন আরও একশ কিলোমিটার বেশি।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের ইনানি সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু হয় শাকিলের পদযাত্রা। ৯০ দিনের মধ্যে ‘সি টু সামিট’ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে অভিযান শুরু করেন তিনি। যাত্রাপথে বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালের প্রায় এক হাজার ৩শ কিলোমিটার দীর্ঘ ও দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এভারেস্টের ২৯ হাজার ৩১ ফুট উঁচু শিখরে আরোহণ করলেন শাকিল।

প্লাস্টিক দূষণ বিষয়ে জনসচেনতা, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং পরিবেশ রক্ষায় টেকসই সমাধানের গুরুত্ব তুলে ধরতে এ অভিযান শুরু করেন এই পর্বতারোহী। এর আগে শাকিল প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইল সফলভাবে সম্পন্ন করেন। যা বিশ্বের ৩৩ জন পর্বতারোহী এখন পর্যন্ত সম্পন্ন করতে পেরেছেন।

এর আগে ২০১৩ সালে তিনি কলকাতা থেকে হেঁটে ১১ দিনে ঢাকায় পৌঁছান। তখনই যোগ দেন বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবে। পর্বতারোহণের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন ভারত থেকে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ২০ হাজার ২৯০ ফুট উচ্চতার কেয়াজো-রি পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে যান এম এ মুহিতের নেতৃত্বে সাত পর্বতারোহী। তাদের একজন শাকিল।

শেষ পর্যন্ত মুহিত, শাকিল ও কাজী বাহলুল শৃঙ্গটি জয় করেন। ২০১৭ সালে লারকে পিক জয়ের অভিযানেও ছিলেন তিনি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে খুব কাছাকাছি গিয়ে তা জয় করা হয়নি। পরের বছর ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেইনিয়ারিং থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের সময়েই তিনি জয় করেন ‘দ্রৌপদী-কা-ডান্ডা-২’ শৃঙ্গ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের আট পর্বতারোহী ‘হিমলুং’ জয়ের অভিযানে নামেন। সেই দলে অংশ নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমলুং-এর চূড়ায় পা রাখেন।

শীর্ষনিউজ/এনআরএফ