
shershanews24.com
প্রকাশ : ১৮ মে, ২০২৫ ০৯:০৩ পূর্বাহ্নশীর্ষনিউজ, ঢাকা : তামিম ইকবালের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি হাঁকালেন ইমন। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ব্যক্তিগত ফিফটি স্পর্শ করেন মাত্র ২৮ বলে। এর পরের পঞ্চাশ রান করেছেন ২৫ বলে। সবমিলিয়ে ৫৩ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন এই ওপেনার। যা বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড কিংবা দেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির কীর্তি-পারভেজ হোসেন ইমনের অনেক প্রাপ্তির দিনে শারজাহতে প্রথম জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশও। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২৭ রানে হারিয়েছে লিটন দাসের দল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে শারজাহতে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে পারভেজ ইমনের ব্যাটে ভর করে ৭ উইকেটে ১৯১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে আমিরাতের ব্যাটাররা একটা সময় পর্যন্ত ম্যাচের মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শেষ পযন্ত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। সবকটি উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে কেবল ১৬৪ রান।
যদিও রান তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল স্বাগতিক আরব আমিরাত। প্রথম ৩ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলেছিল ৩৮ রান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আভাস দেওয়া জুটি ভাঙেন পেসার হাসান মাহমুদ। মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ জোহাইব। অভিষেকে ৯ বলে ৯ রান করেন তিনি।
পরের ওভারে বাংলাদেশের স্বস্তি বাড়ান মুস্তাফিজুর রহমান। বল হাতে তুলে নিয়েই সাফল্য পেলেন। কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনে ব্যাট করতে নামা আলিশান শারাফুকে। এরপর তৃতীয় উইকেটে রাহুল চোপড়াকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তুলেছিলেন ওয়াসিম হামিদ। রান তাড়ায় বেশ সাবলীল মনে হচ্ছিল আমিরাতকে। মাত্র ৩২ বলে ব্যক্তিগত ৫০ পূর্ণ করে ছুটছিলেন ওপেনার ওয়াসিম। যদিও আর ইনিংস বড় করতে পারেননি। তানজিম সাকিবের বলে শর্ট ফাইন লেগে মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে ধরা পড়েন। তাতে ভাঙে ৪২ বল স্থায়ী ৬২ রানের জুটি। ম্যাচ থেকে অনেকটা তখনই ছিটকে যায় স্বাগতিকরা।
মোহাম্মদ ওয়াসিমের পর রাহুল চোপড়াকেও ফেরান তরুণ পেসার। পরপর দুই ওভারে দুই সেট ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরলেন সাকিব। স্লোয়ার ডেলিভারিতে বড় শটের খোঁজে পয়েন্টে ধরা পড়েন রাহুল। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২২ বলে ৩৫ রান করেন কিপার-ব্যাটসম্যান।
নিয়মিত বিরতিতে প্রতিপক্ষের উইকেট ভাঙতে পারলেও বেশ ছন্নছাড়া বোলিং করেছেন শেখ মেহেদী ও তানভীররা। নিজের কোটার শেষ ওভারে এসে উইকেটের দেখা পান তানভীর। ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ধ্রুভ পারাশার খেলেছেন ৭ বলে ৩ রানের ইনিংস।
তানভীরের পর জোড়া আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজ। আর তাতে খেলা শেষের আগেই অনেকটাই ছিটকে যায় স্বাগতিকরা। ইনিংসের শেষ ওভারে ৩৪ রানের সমীকরণ মেলাতে হতো জিততে হলে। আমিরাত উল্টো দুই উইকেট হারিয়ে করতে পারে কেবল ৬ রান। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় আশা জাগিয়েও হেরেছে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন মুস্তাফিজ, তানজিম সাকি ও শেখ মেহেদী।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন এদিন বাংলাদেশের হয়ে ভালো শুরুর আভাস দেন। প্রথম ওভারেই চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড়ের ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন তামিম। তবে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে করেছিলেন মতিউল্লাহ খান। সেখানে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে ধরা পড়েন তামিম। সাজঘরে ফেরার আগে ৯ বলে ১০ রান এসেছে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে।
তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি লিটন। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ জাওয়াদউল্লাহর দারুণ একটি ইয়র্কারে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ৮ বলে ১১ রান করেন তিনি। পাওয়ার প্লে'তে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছিল দুই উইকেটে ৫৫ রান।
এরপর তাওহিদ হৃদয়-জাকের আলিরা শুরু পেলেও উইকেটে থিতু হতে পারেননি। এ ছাড়া লোয়ার মিডল অর্ডারে শেখ মেহেদি-শামিম পাটোয়ারীরা ব্যর্থ হয়েছেন। এক প্রান্তে ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝেও আরেক প্রান্তে রীতিমতো ঝড় তোলেন পারভেজ ইমন। শেষ পর্যন্ত তার ইনিংস থামে ৫৪ বলে ১০০ রানে।
শীর্ষনিউজ/এনআরএফ