শনিবার, ১০-মে ২০২৫, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
  • অর্থনীতি
  • »
  • আ. লীগ আমলে লুটপাটে ব্যাংক খাতের মূলধন স্মরণকালের সর্বনিম্ন

আ. লীগ আমলে লুটপাটে ব্যাংক খাতের মূলধন স্মরণকালের সর্বনিম্ন

shershanews24.com

প্রকাশ : ০৯ মে, ২০২৫ ০৬:০৭ অপরাহ্ন

শীর্ষনিউজ, ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন লুটপাটের প্রভাবে মূলধন রাখার হার স্মরণকালের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে নেমেছে। লুটপাট ও টাকা পাচারের কারণে ব্যাংক খাতে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ বা সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু আয় না হওয়ায় এর বিপরীতে চাহিদা অনুযায়ী মূলধন রাখতে পারছে না। ফলে মূলধন ঘাটতি বেড়ে স্মরণকালের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।

গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মূলধন সংরক্ষণের হার ছিল ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ। এর আগে ২০০৪ সালে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ২০০৫ সাল থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত মূলধনের হার ডাবল ডিজিটে ছিল। খেলাপি ঋণের লাগামহীন বৃদ্ধি ব্যাংকগুলোর মূলধন ক্ষয় করে ফেলেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে লুটপাট হলে খেলাপি ঋণ বেড়ে যায়। তখন ব্যাংকের আয় কমে যায়। ফলে প্রভিশন রাখার চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু ব্যাংকগুলো আয় কমার কারণে চাহিদা অনুযায়ী প্রভিশন রাখতে পারে না। ফলে প্রভিশন ঘাটতি বাড়তে থাকে। এতে মূলধন ঘাটতিও বাড়তে থাকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে কমপক্ষে ১০ শতাংশ মূলধন রাখতে হয়। তবে ১২ শতাংশ রাখতে পারলে ভালো। কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের গত সাড়ে ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন লুটপাটের কারণে এখন খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। যে কারণে মূলধন কমে যাচ্ছে। ২০০৪ সালে যখন সর্বনিু মূলধন ছিল, তখন খেলাপি ঋণের হার ছিল ১৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। তখন মূলধন ছিল ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এখন খেলাপি ঋণের হার ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ, যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বনিম্নে।

২০০৫ সাল থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মূলধনের হার সহনীয় মাত্রায় ছিল। গত বছরের জুনে মূলধন ছিল ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এরপর থেকেই তা কমতে থাকে। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশে। ডিসেম্বরে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ। আগামী দিনে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন মূলধন ঘাটতিও আরও বেড়ে যাবে। তবে সব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি নেই। লুটপাটের কারণে দুর্বল ব্যাংকগুলোতেই মূলধন ঘাটতি বেশি। এর মধ্যে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ঘাটতি বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ব্যাংকগুলোয় ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন ছিল ১১ দশমিক ৯৪ শতাংশ।ব্যাংকগুলোর মূলধন কমে যাওয়ার কারণে আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি বিনিয়োগের সক্ষমতাও কমছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

শীর্ষনিউজ