শীর্ষনিউজ, ঢাবি: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী। তিনি বলেছেন, ‘এনসিপির ভুল তিনটা। এনসিপি জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে, তাদের অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই ঐক্য মূলত নষ্ট করেছে এনসিপি।’
শনিবার (২৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত দেশের চলমান সংকট মোকাবিলায় জুলাই জনতার জাতীয় ঐক্য বিনির্মাণে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাদী বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র না হলে জুলাই শহীদ পরিবার কিংবা যারা এই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন তাদের ভারত আর আওয়ামী লীগ মিলে কচুকাটা করবে। ঘোষণাপত্র হলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এই সরকারের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগকে চায় তাদের নৈতিক পরাজয় হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের মাধ্যমে। তাদের চূড়ান্ত পরাজয় হবে জুলাই সনদ তৈরি হলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংকটকালীন সময়ে পড়ে গেছি আমরা। রাষ্ট্রের কোনো সঠিক তথ্য নেই। জাতির এই মুহূর্তে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল সবকিছু জানা স্বত্ত্বেও প্রকাশ করছে না। বড় কথা হলো দেশে অনেকগুলো আন্দোলন হয়েছে, তখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেননি পদত্যাগ করবেন।’
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মন চাইলেই পোস্ট দেয়। তিন ঘন্টা পর ডিলেট করে দেয়। পরে এসে ক্ষমা চায়। ভাই, আপনি যদি আবেগী হন তাহলে নাটক করেন, আর্ট করেন। আপনাকে উপদেষ্টা হতে কে বলেছে?’
অন্তর্বর্তী সরকারের করিডোর নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার নেই উল্লেখ করে হাদি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর প্রধান যে বক্তব্য টা দিলেন, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। বর্তমান সরকার এবং সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। আপনারা বিগত সরকারের গুম, খুন সম্পর্কে জানতেন, কিন্তু চুপ থেকেছেন। তবে জুলাইয়ের অংশীদারিত্ব আমরা অস্বীকার করবো না।’
উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ ক্ষমতাকে পাঁচ বছরের জন্য প্রলম্বিত করতে চান মন্তব্য করে ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা বলেন, ‘ড. ইউনূসকে ব্যবহার করে অনেক উপদেষ্টা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারের কাজ ছিল জুলাই হত্যার বিচার, মৌলিক সংস্কার, সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচন সংস্কার এবং নির্বাচন দেয়া। এর বাইরে অন্য কাজ আপনি (ড. ইউনূস) কেন করবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘দিল্লির ফাঁদে পা দিয়ে দেশ যদি ক্ষমতা হারায় এর জন্য দায়ী থাকবে রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে যতগুলো কথা বলেছে সেগুলো যুক্তিসঙ্গত কিন্তু তারা এটা বোঝে না সেনাবাহিনীর একটা অংশ ক্ষমতায় যেতে চায়। বিএনপির উচিত ছিল জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্রের স্টেক নেওয়া। বিএনপি জুলাই সংস্কার, ঘোষণাপত্র নিয়ে কেনো কথা বলে না। শুধু নির্বাচন নিয়ে কথা বলে, কারণ তারা দিল্লির ছকে পা দিয়েছে।’
ছাত্র উপদেষ্টারা পদত্যাগ করলে এই সরকারের আর এক মিনিটও বৈধতা থাকবে না উল্লেখ করে হাদি বলেন, ‘ছাত্র উপদেষ্টাদের বিপক্ষে বিএনপি বিভিন্ন কথা বলে। কিন্তু বিএনপির এমন একজন উপদেষ্টা রয়েছেন, যিনি স্যূটকেস গুছিয়ে বসে আছেন ড. ইউনূস ক্ষমতা ছাড়লে প্রধান উপদেষ্টা হবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস আপনি চাইলেই পদত্যাগ করতে পারবেন না। আপনাকে বসিয়েছে যারা, আপনাকে ছাড়তেও বলবে তারা। সবাই ইউনূসের হাতকে শক্তিশালী করেন, অতি পাকনা উপদেষ্টাদের দপ্তরবিহীন করেন।’
শীর্ষনিউজ/এ. সাঈদ