শীর্ষনিউজ, ঢাকা: ঈদুল আজহার বাকি এখনো এক মাস। এরই মধ্যে উত্তপ্ত মসলাজাতীয় পণ্যের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। রসুন কিনতেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম। ২০০ টাকা কেজির আদা ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হলুদ কিনতে খরচ হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪২০ টাকা। এলাচের কেজি ঠেকেছে ৫৩০০ টাকায়, যা এক মাস আগে ছিল ৫০০০ টাকা। পাশাপাশি বাড়ছে চালের দামও। ব্রয়লার মুরগির দামেও অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা। আর পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ৭০ টাকা, যা সাতদিন আগেও ৫০-৬০ টাকা ছিল। দেশি রসুন প্রতি কেজি সর্বনিু ১১০ টাকায় বিক্রি হলেও এ পণ্য এক মাস আগে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮৫ থেকে ২৪০ টাকা। প্রতি কেজি দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা, যা এক মাস আগেও খুচরা বাজারে ৩০০ টাকা ছিল। আমদানি করা শুকনা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৪৩০ টাকা। প্রতি কেজি হলুদ মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৪২০ টাকা।
পাশাপাশি প্রতি কেজি আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, যা মাসের ব্যবধানে ২০ টাকা বেশি। দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৫০ টাকা। প্রতি কেজি জিরা কিনতে ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা। ৫৫০ টাকা কেজি দরের দারুচিনি মাসের ব্যবধানে বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়।
প্রতি কেজি লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা, যা এক মাস আগে ১৩৫০-১৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ছোট দানার এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪৬০০ থেকে ৫৩০০ টাকা, যা এক মাস আগে ৪৫০০ থেকে ৫১০০ টাকা ছিল।
রাজধানীর কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, কুরবানির ঈদের বাকি এখনো এক মাস। এরই মধ্যে বিক্রেতারা সব ধরনের মসলা পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। কিন্তু বাজারে এ পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। প্রতি ঈদের আগে এটা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। দাম বাড়িয়ে ভোক্তার পকেট কাটে বিক্রেতারা। ভোক্তার হয়রানি দূর করতে বাজারে কার্যকর অভিযানের দাবি জানান তিনি।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, এ চিত্র প্রতি বছরের। কুরবানির ঈদ এলেই অসাধু বিক্রেতারা মসলা পণ্যের দাম বাড়ায়। এবারও তাই হয়েছে। এজন্য এখন থেকেই কঠোরভাবে তদারকির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
এদিকে খুচরা বাজারে সরু চালের মধ্যে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮৭ থেকে ৮৮ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ৮৫ টাকা ছিল। প্রতি কেজি পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। প্রতি কেজি মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৫ টাকা, যা এক মাস আগেও ৫০-৫৫ টাকা ছিল। পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। প্যাকেটজাত প্রতি কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। আর প্যাকেটজাত ময়দা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা।
মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দিদার হোসেন বলেন, মিলে দাম বেড়েছে। এখন আমন মৌসুমের চাল শেষের দিকে। বোরো চাল কৃষকের গোলায় উঠছে। তাই এ সময় চালের দাম কিছুটা বেশি থাকে। নতুন চাল পুরোদমে বাজারে এলেই দাম কামে যাবে।
খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা, যা সাতদিন আগেও ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬৬০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা। প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২৫০ টাকায়।
শীর্ষনিউজ