০১:০৫ পূর্বাহ্ন মঙ্গলবার, ১৩-মে ২০২৫

ভাবমূর্তি সংকট: প্রাণঘাতী অস্ত্র পাবে না পুলিশ, থাকবে এপিবিএনের হাতে

প্রকাশ : ১২ মে, ২০২৫ ০৮:৩৮ অপরাহ্ন

শীর্ষনিউজ, ঢাকা: আওয়ামী লীগ শাসনামলে পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে বিরোধী দলের বিশেষ করে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। বিশেষ করে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অন্তত দেড় হাজার নিহত হয়েছেন। এতে ভাবমূর্তি সংকটে পড়ে বাংলাদেশ পুলিশ। তাই রাষ্ট্রীয় এই গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীর ভাবমূর্তি উদ্ধার করতে পুলিশকে আর অস্ত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে আর্মড পুরিশ ব্যাটালিয়নের হাতে অস্ত্র থাকবে। এমন তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নবম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।  

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পুলিশের হাতে আর অস্ত্র থাকবে না, তাদের কাছে থাকা প্রাণঘাতী অস্ত্র জমা দিতে হবে। অস্ত্র থাকবে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যদের হাতে।”  

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ১৯২৬ জন। ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ নামে এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য সবচেয়ে আলোচিত র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), যে বাহিনীটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলেও পড়েছিল।

পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিট পুনর্গঠনের কথা জানিয়েছেন সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। বলেন র‌্যাব পুনর্গঠনে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। 


২০২৪ সালে বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে অন্তত এক হাজার ৯২৬ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। তারা এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে।


পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরের ক্রসফায়ারের তথ্য সংরক্ষণ করেছে। এ–সংক্রান্ত তথ্যে দেখা যায়, এই সাত বছরেই ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২৯৩ জন। দেশের এমন কোনো জেলা নেই যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেনি। এর মধ্যে অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মীও রয়েছেন।

‘ক্রসফায়ারের’ মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার প্রবণতা শুরু হয় মূলত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর। এসব ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ অর্থের বিনিময়ে বা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। যার একটা বড় নজির ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনা। র‌্যাব-১১–এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদসহ ১১ জন র‌্যাব সদস্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর হোসেনের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে এসব খুনে জড়ান।

শীর্ষনিউজ/ফারুক