সোমবার, ১২-মে ২০২৫, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
  • জাতীয়
  • »
  • মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বেগম খালেদা জিয়া

মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বেগম খালেদা জিয়া

shershanews24.com

প্রকাশ : ০৩ মে, ২০২৫ ১২:০৫ অপরাহ্ন

শীর্ষনিউজ, ঢাকা: দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আগামী ৫ মে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার আগমণকে ঘিরে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি ও উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর মধ্যেই মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। অসুস্থতার কথা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে তার যাত্রাপথ সহজ করতে প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তা ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি, যাতে অন্য যাত্রীদের কোনও ভোগান্তি না হয়।

শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, বেগম খালেদা জিয়া বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন। আগামীকাল ৪ মে লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বেগম খালেদা জিয়াকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি  ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের কথা রয়েছে।

শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি লন্ডন থেকে ছেড়ে সিলেট হয়ে ঢাকায় আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। বিমান কর্তৃপক্ষ তথা বাংলাদেশ সরকার অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বিমানের লন্ডন-সিলেট-ঢাকা’র পরিবর্তে লন্ডন-ঢাকা-সিলেট করার প্রস্তাব করে। প্রস্তাবটি বেগম জিয়ার কাছে পৌঁছালে বিমানের অন্য সহযাত্রীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে তিনি বিমান কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবটি নাকচ করেন। মানবতার আরেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।’ তার এই সিদ্ধান্তে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝেও প্রশংসার সুর ধ্বনিত হচ্ছে। অনেকেই একে একজন রাজনৈতিক নেত্রীর মানবিকতার অনন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।

জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি রেগুলার বিমানে চড়ে দেশে ফিরবেন। 

বেগম জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও আর্থরাইটিসসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। সূত্র জানিয়েছে, তার সঙ্গে দুই পুত্রবধূও দেশে ফিরতে পারেন।

প্রসঙ্গত, উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গত ৭ জানুয়ারি রাতে ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হন েেবগম খালেদা জিয়া। পরদিন ৮ জানুয়ারি সকালে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বেগম জিয়াকে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে ভর্তি হন তিনি। এই হাসপাতালটির লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে বেগম জিয়া চিকিৎসাধীন ছিলেন। লন্ডন ক্লিনিকে ১৭ দিন চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর ছাড়পত্র পেলে গত ২৫ জানুয়ারি লন্ডনের কিংস্টনে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন খালেদা জিয়া। বাসায় থেকে লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডন সফর করেছিলেন। এরপর তার আর কোনো বিদেশ সফর হয়নি। 
২০১৫ সালে লন্ডনে ঈদের পর ২৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ওই অনুষ্ঠানে মায়ের পাশে তারেক রহমান, তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমানও ছিলেন। ওই তিন তিনি সবাইকে মিলেমিশে কাজ করার পরামর্শ দেন। 

২০১৮ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন। করোনা সময়কালে সরকার তাঁকে বিশেষ কারামুক্তি দেয়। কারাবন্দী অবস্থায় চারটি ঈদে কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর  যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দী হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

 শীর্ষনিউজ/এম