০১:৪৯ পূর্বাহ্ন রবিবার, ১১-মে ২০২৫

টাঙ্গাইলে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক

প্রকাশ : ০৩ মে, ২০২৫ ১১:৪১ পূর্বাহ্ন

টাঙ্গাইলে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি থামছেই না। সেচের ভরা মৌসুমে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় অনেক স্কিম বন্ধ রয়েছে। অনেক স্থানে সেচ-সংকটে থোড় বোরো ধান পুড়ে যাচ্ছে। 

জানা যায়, টাঙ্গাইলের মধুপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর ও ভূঞাপুর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-০১। তদারকির অভাবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প এখানে জনপ্রিয়তা পায়নি। ফলে সুলভ মূল্যে সৌর বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ এবং সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক।
 
পবিসের কর্মকর্তারা জানান, টাঙ্গাইলের পাঁচ উপজেলায় যান্ত্রিক সেচের শতকরা ৬৫ ভাগই চলে ন্যাশনাল গ্রিডের বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়ে। চলতি খরায় নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহেও কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎচালিত সেচে সবচেয়ে দামি যন্ত্রাংশ হলো ট্রান্সফরমার। এর ভেতরে থাকে পিতলের দামি কয়েল। এ কয়েলের লোভে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা চুরি করে ট্রান্সফরমার। 

বিগত পাঁচ মাসে মধুপুরে ১২টি, ধনবাড়ীতে ২০টি, গোপালপুরে ২১টি, ঘাটাইলে ৩৫টি এবং ভূঞাপুরে চারটি ট্রান্সফরমার চুরি যায়। অনেক স্থানে রাতের বেলা সেচ স্কিমের পাহারাদারকে বেঁধে রেখে ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। 

গ্রাহকরা জানান, প্রতি বছরই বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ট্রান্সফরমারের 
দাম। ৫-২৫ কেভিএ ট্রান্সফরমারের দাম ৪০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের ভেতরে প্যাঁচানো পিতলের কয়েল ভাঙাড়ির দোকানে বেচে চোরেরা পায় বড়জোর ৫-৬ হাজার টাকা। 


ধনবাড়ী জোনাল অফিসের এজিএম কম মিথুন কুমার রায় জানান, সেচের ট্রান্সফরমার চুরি গেলে গ্রাহককে ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা অফিসে জমা দিয়ে নতুন ট্রান্সফরমার নিতে হয়। আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকের ট্রান্সফরমার প্রথম বার চুরি গেলে অর্ধেক মূল্য এবং দ্বিতীয় বার চুরি গেলে পুরো টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হয়। অনেক সেচ গ্রাহক অভিযোগ করেন, চুরির টাকা ১০০ ভাগ জমা দেওয়ার পরও সহজে ট্রান্সফরমার মেলে না। ঠিকাদার কিংবা সমিতির কর্মচারীদের পারিতোষিত না দিলে হয়রানি হতে হয়। 

গোপালপুর উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের উত্তর পাথালিয়া গ্রামের ডগাবিলে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, ২৫ কেভিএ একটি ট্রান্সফরমার এক সপ্তাহে আগে চুরি যাওয়ায় তীব্র সেচ-সংকট দেখা দিয়েছে। এ ট্রান্সফরমারের আওতায় পাঁচ জন সেচ গ্রাহক রয়েছেন। অগভীর নলকূপের মাধ্যমে তারা ২০০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। গ্রাহক আনোয়ার হোসেন জানান, টানা ৩৫ বছর ধরে বিদ্যুৎচালিত একটি সেচ মোটর চালান তারা। আগে ট্রান্সফরমার চুরি গেলে অর্ধেক দামে সরবরাহ পেতেন। কিন্তু কয়েক বছর আগে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এ সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার সেচ খাতে ভর্তুকি দেয় শুনেছি। তাহলে ট্রান্সফরমার চুরির ক্ষেত্রে গ্রাহক কেন ভর্তুকি মূল্যের সেই সুযোগ পাচ্ছেন না? 

অন্যান্য সেচ গ্রাহকরা জানান, চুরির ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত হয়েছে। কিন্তু চুরির কূলকিনারা হয়নি। গোপালপুর জোনাল অফিস চুরি যাওয়া ২৫ কেভিএ ট্রান্সফরমার বাবদ সোয়া লাখ টাকা দাবি করছে। চাষিরা এ টাকা সংগ্রহ করতে পারছেন না। ফলে মিলছে না ট্রান্সফরমার। চালু হচ্ছে না সেচ পাম্প। খরায় থোড় ধান পুড়ছে। 

মধুপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. নূরুল আমিন জানান, চুরির পর সামর্থ্যবানরা টাকাপয়সা জমা দিয়ে নতুন ট্রান্সফরমার নিয়ে সেচ চালু করছেন। একটি গভীর নলকূপসহ কয়েকটি অগভীর নলকূপ ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎচালিত সেচ পাম্প বন্ধ রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লালমনিরহাটে গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল
নেতানিয়াহুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের
আ.লীগ নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়ায় ‘মার্চ টু যমুনা’ ঘোষণা
গণতন্ত্রবিরোধী পলাতক শক্তির সঙ্গে জনগণ কোনো আপস মানবে না
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময় 
জরুরি বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদ, যমুনায় চোখ ছাত্র-জনতাসহ রাজনৈতিক দলগুলোর
ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষকের পরিবারকে তারেক রহমানের সহায়তা
গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর 
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে আলোচনা করতেই উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক: প্রেসসচিব