shershanews24.com
জোয়ারে ভেসে গেল শতাধিক গরু, নিঃস্ব কৃষকদের আহাজারি
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫ ০৮:৩৭ অপরাহ্ন
shershanews24.com

shershanews24.com

শীর্ষনিউজ, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে প্রায় শতাধিক গরু। একের পর এক ভেসে উঠছে মরা গরু। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। ভুক্তভোগীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ।

শুক্রবার (২৩ মে) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ খালে এ ঘটনা ঘটে । এতে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, কৃষক মহসিনের  ৪ টি, নাহিদের ৩ টি, ইয়ানূরের ৩ টি, এমার ২ টি, মাসুমের ১ টি, আবুল হোসেনের ৩ টি, শাহজালালের ৩ টি, কবির হোসেন খানের ৩ টি, শরিফ হোসেনের ৩ টি, তরিকুল ইসলামের ২ টি সহ শতাধিক গরু পানির তোড়ে ভেসে যায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল খান বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের গ্রামবাসীর জন্য একটি দুঃখের দিন হয়ে থাকবে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সবারই গরু রয়েছে। ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন চরে খাস খাইয়ে গরুগুলো লালন-পালন করে সবাই। গ্রাম ও চরের মধ্যে ছোট একটি খাল রয়েছে। খাল পাড়ি দিয়ে চরে গিয়ে ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকেলে গরুগুলো আবার গোয়ালে ফিরে আসে। শুক্রবার বিকেলে খাল পাড় হবার সময় হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে শতাধিক গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৪১টি মৃত গরু উদ্ধার করা হলেও এখনো প্রায় ৬০টির মতো গরু নিখোঁজ। লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা পাগল প্রায়।

ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন বলেন, ‘এমন ঘটনা জীবনেও ঘটে নাই। এমন কিছু ঘটতে পারে তা আমরা চিন্তাও করি নাই। আমার চারটি গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি, পথের ফকির হয়ে গেছি।’

ভুক্তভোগী আবু তালেব সুজন খান বলেন, ‘ভাটি বলাকী গ্রামের ২৫/৩০টি পরিবারের পাঁচ শতাধিক গরু আছে। গরুগুলো গ্রামের পাশের চরে ছেড়ে দেয়া হয়। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঘাস খেয়ে চর থেকে গ্রামের দিকে ফেরার পথে তীব্র স্রোতে শতাধিক গরু পানির সাথে ভেসে যায়। এখনো পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত গরুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নেয়ামূল হক বলেন, ‘দেখলাম কচুরিপানার চাপে ও জোয়ারের পানির তোড়ে একের পর এক গরু ভেসে যাচ্ছে। এরকম অদ্ভুত ঘটনা কখনো দেখিনি আমরা।’

বিষয়টি সম্পর্কে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, ‘এরকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: ফয়সাল আরাফাত বিন ছিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছি আমরা। আমাদের অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তাদের সাহায্য করবো।’

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আশরাফুল আলম এ বিষয়ে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমরা ৩৬টি মরা গরু উদ্ধারের খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা সহায়তা করব।’

শীর্ষনিউজ/এ. সাঈদ