শীর্ষনিউজ, ঢাকা : সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, মানবিক করিডরের মতো স্পর্শকাতর-ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার বর্তমান সরকারের নেই। এ সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে। এটি হতে হবে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। করিডোরের ব্যাপারে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে, রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়ও এখানে যুক্ত।
বুধবার (২১ মে) সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় (অফিসার্স অ্যাড্রেস) সেনাবাহিনী প্রধান এসব কথা বলেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
সেনাপ্রধান বলেন, করিডর বিষয়ে সরকার কি ভাবছে অথবা জাতিকে একটি প্রক্সি যুদ্ধের (proxy war) দিকে ঠেলে দিচ্ছে কিনা- এই বিষয়ে সরকার স্পষ্টভাবে কিছুই জানাচ্ছে না। অনুষ্ঠানের পরের অংশে এক অফিসারের প্রশ্নের উত্তরে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘There will be no corridor’।
কর্তব্যরত ব্যতীত দেশের সব সেনানিবাস ও জাতিসংঘ মিশনে মোতায়েন সকল সেনা অফিসার এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। প্রথম অংশে সেনাপ্রধান অফিসারদের উদ্দেশে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রায় ৩০ মিনিট বক্তব্য রাখেন এবং এরপর প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট অফিসারদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
প্রাথমিক বক্তব্যে নিরলসভাবে কাজ করে দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনের জন্য সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে অভিবাদন জানান তিনি। তবে বিভিন্ন কারণে দেশের শান্তি শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করেন জেনারেল ওয়াকার।
সার্বিকভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসনসহ সব সংস্থা ভেঙে পড়েছে এবং পুনর্গঠিত হতে পারছে না। শুধু সশস্ত্রবাহিনী এখনও পর্যন্ত টিকে আছে এবং দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর হতে আজ পর্যন্ত দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সেনাবাহিনীর অক্লান্ত ও নিঃস্বার্থ ভূমিকা সত্বেও বিভিন্ন মহল হতে সেনাবাহিনী ও সেনা প্রধানকে টার্গেট করা হচ্ছে।
এ সময় তিনি সকলকে অর্পিত দায়িত্ব সর্বোচ্চ কর্তব্য পরায়ণতা ও আনুগত্যের সাথে পালন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। পরবর্তীতে এক অফিসারের প্রশ্নের উত্তরে তিনি মজলুমদের অশ্রুজল যাতে না ঝরে এবং মজলুমদের অধিকার রক্ষায় সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
শীর্ষনিউজ/এনআরএফ