shershanews24.com
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য, ভারতে মুসলিম অধ্যাপক গ্রেপ্তার
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫ ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
shershanews24.com

shershanews24.com

শীর্ষনিউজ, দিল্লি: ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করার অভিযোগে অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুসলিম অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ।
রোববার (১৮ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী দিল্লি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজেপি যুব মোর্চার হরিয়ানা শাখার সাধারণ সম্পাদক যোগেশ জাথেরির করা অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

দিল্লি থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরের হরিয়ানার সোনেপাতে অবস্থিত এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তদন্তে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

অপারেশন সিঁদুর পরিচালনার বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নারী কর্মকর্তাদের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে মাহমুদাবাদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে লেখেন, অনেক ডানপন্থি সমর্থক কর্নেল সোফিয়া কুরেশির প্রশংসা করছেন। এটা ভালো।
তবে তারা যদি একইরকম জোরালোভাবে গণপিটুনি, বুলডোজার অভিযান ও ঘৃণার রাজনীতির শিকার নাগরিকদেরও রক্ষা করার দাবি তোলেন, তাহলে সেটাই হবে প্রকৃত দেশপ্রেম।

তিনি আরও লেখেন, ‘নারী কর্মকর্তাদের সামনে এনে সংবাদ উপস্থাপন নিঃসন্দেহে একটি প্রতীকী কাজ। কিন্তু এসব যদি বাস্তবে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তায় প্রতিফলিত না হয়, তাহলে এটি নিছক লোক দেখানো এবং ভণ্ডামি।’
এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশন মন্তব্যটিকে ‘নারী সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি অবমাননাকর’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাকে নোটিশ পাঠায়।

প্রসঙ্গত, পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলার পর ৬ মে ভারত চালু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’। এরপর সেনাবাহিনীর নারী কর্মকর্তাদের সামনে রেখে প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ। এই ‘অপটিক্স’ নিয়েই সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তোলেন মাহমুদাবাদ।

পোস্টে তিনি সেনাবাহিনীর মুসলিম নারী কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশির নাম উল্লেখ করেন, যা সমালোচকরা বিতর্কিত মনে করছে।

এদিকে মাহমুদাবাদের বিরুদ্ধে মামলায় বলা হয়েছে, তার মন্তব্যে ‘সাম্প্রদায়িক বিভেদ’ ছড়ানোর উপাদান রয়েছে এবং তা ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ করেছে।

তবে মাহমুদাবাদ নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেন, আমি যা বলেছি, তা সম্পূর্ণভাবে নাগরিক ও সেনাদের নিরাপত্তার পক্ষে ছিল। আমার বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সেখানে কোনো নারীবিরোধী কিছু নেই।

অধ্যাপক মাহমুদাবাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে একাধিক বুদ্ধিজীবী ও একাডেমিকরা একত্রিত হয়েছেন। প্রায় ১২০০ শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবী একটি খোলা চিঠিতে বলেন, অধ্যাপক মাহমুদাবাদ আসলে সেনাবাহিনীর সংযমের প্রশংসা করেছেন এবং ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের আদর্শের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দোষী বানানো হচ্ছে।

শীর্ষনিউজ/ বান্না