আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ভারতের বিমানগুলোর জন্য আরও এক মাস বন্ধ রাখবে। রোববার (১৮ মে) সূত্রের বরাতে দ্য নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে পাকিস্তান ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধের সময়সীমা আরও এক মাসের জন্য বাড়িয়ে দেবে।
গত মাসে ভারতের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ভারত ২৩ এপ্রিল পাকিস্তানের জন্য আকাশসীমা এক মাসের জন্য বন্ধ করে দেয়। পরের দিন পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নেয়। আকাশসীমা সীমাবদ্ধতার ফলে ভারত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইসলামাবাদের উচ্চপদস্থ সূত্র দ্য নিউজকে জানিয়েছে, পাকিস্তানকে যে পরিস্থিতির কারণে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা হয়েছিলো, তাতে কোনও উন্নতি লক্ষ্য করা না যাওয়ায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। বর্তমান আকাশসীমা বন্ধের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিমান পরিবহন বিভাগ বিমানকর্মীদের জন্য একটি নোটিশ জারি করবে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (ICAO) নিয়ম অনুসারে, কোনো সদস্য দেশ একবারে এক মাসের বেশি সময় ধরে তাদের আকাশসীমা বন্ধ করতে পারে না।
উল্লেখ্য, এ মাসের শুরুতে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে তিন দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা সামরিক সংঘর্ষের ফলে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে।
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলার পর নয়াদিল্লি পদক্ষেপ নেয়ার পর পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি এক বৈঠকে ২৪ এপ্রিল থেকে ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৩ মে পর্যন্ত কার্যকর এ নিষেধাজ্ঞাগুলো বাণিজ্যিক এবং সামরিক উভয় বিমানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়ার ফলে শত শত ভারতীয় ফ্লাইট ব্যাহত হচ্ছে, জ্বালানি ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দীর্ঘ দূরত্বের বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোকে জ্বালানি ভরার জন্য মাঝপথে ব্যয়বহুল স্টপ করতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০টি ভারতীয় বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমা অতিক্রম করতো, যার অনেকগুলো দিল্লি, মুম্বাই, অমৃতসর এবং আহমেদাবাদের মতো শহর থেকে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত দীর্ঘ দূরত্বের রুটে চলাচল করে।
অপরদিকে, তুলনামূলকভাবে পাকিস্তানে কেবল একটি পূর্বমুখী ফ্লাইট প্রভাবিত হয়। যেহেতু পাকিস্তান ইতোমধ্যেই দূরপ্রাচ্যের কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে, তাই পাকিস্তানের ওপর এর প্রভাব খুব কমই।
বন্ধের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেশ কয়েকটি ভারতীয় বিমানকে মাঝপথে ব্যয়বহুল পথ পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হয়েছিলো। এয়ার ইন্ডিয়ার টরন্টো-দিল্লির একটি বিমান জ্বালানি ভরার জন্য কোপেনহেগেনে অবতরণ করে, অন্যদিকে প্যারিস এবং লন্ডন থেকে আসা বিমানগুলো আবুধাবিতে অপরিকল্পিতভাবে থেমে যায়।
ভারতের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। ১৯৯৯ সালের কার্গিল সংঘর্ষের সময় এবং ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পরও একই রকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিলো। উভয় ক্ষেত্রেই, এর পরিণতি পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের জন্য বেশি গুরুতর ছিলো।
শীর্ষনিউজ/এওয়াই