শীর্ষ নিউজ ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ ও সহিংস হামলার ফলে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে সীমান্ত বন্ধ থাকায় খাদ্য, পানি ও ওষুধ প্রবেশ করতে পারছে না, যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নেমেছে। এই চরম সংকটের মাঝে শনিবার (৩ মে) গাজা সিটি’র আল-রান্তিসি হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় মারা গেল মাত্র কয়েক বছরের এক ফিলিস্তিনি শিশু—জানান সালেহ আল-সাকাফি।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর খবরে জানানো হয়েছে, জানান নামের এই শিশুটির মৃত্যু সরাসরি অপুষ্টি ও বিশুদ্ধ পানির অভাবজনিত কারণে হয়েছে। গাজা জুড়ে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ২.৩ মিলিয়ন মানুষের প্রয়োজনীয় মৌলিক উপকরণ প্রবেশ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। মার্চের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সীমান্ত পারাপারে মানবিক সহায়তা সামগ্রী আটকে থাকায় শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে চলেছে। জাতিসংঘ ও বহু মানবাধিকার সংস্থা বহুবার এই সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলের নিষ্ঠুর অব্যাহত নীতিতে পরিস্থিতি দিনকে দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে খাদ্য অবকাঠামো ধ্বংস করছে। তারা রুটি উৎপাদনের বেকারি, ত্রাণ কেন্দ্র, স্যুপ রান্নার কারখানা, পানির কূপ, খাদ্য গুদাম ও কৃষিজমি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। একে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধা অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহৃত একটি নীতি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। ২ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত গাজার সব বড় সীমান্তপথ বন্ধ রাখা হয়েছে, যার ফলে মানবিক সহায়তার একটি কণাও প্রবেশ করতে পারছে না। আন্তর্জাতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্রতিরোধহীন অবরোধের ফলে চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আক্রমণে এখন পর্যন্ত ৫২,৪০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গত নভেম্বরেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একইসঙ্গে, গাজায় পরিচালিত এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
শীর্ষনিউজ