সোমবার, ১২-মে ২০২৫, ০৮:২০ অপরাহ্ন
  • আন্তর্জাতিক
  • »
  • ‘পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা দেখে বিস্মিত ভারতীয়রা’: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

‘পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা দেখে বিস্মিত ভারতীয়রা’: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

shershanews24.com

প্রকাশ : ১১ মে, ২০২৫ ০৫:৫৪ অপরাহ্ন

শীর্ষনিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক মাইকেল ক্লার্ক। পাকিস্তানের চীনা প্রযুক্তিনির্ভর যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মুখে ভারতের সামরিক বাহিনী অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল বলেন তিনি। তার মতে, পাকিস্তানের এই শক্তি-প্রদর্শনকে ঝুঁকি নেওয়ার ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছে ভারত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

 ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ক্লার্ক বলেন, ‘পাকিস্তান যে সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেছে, তা দেখে ভারতীয়রা হয়তো খানিকটা বিস্মিত হয়েছে। পাকিস্তান বেশ কয়েকটি চীনা প্রযুক্তিনির্ভর সরঞ্জাম, বিশেষ করে জে-১০ যুদ্ধবিমান ও এইচকিউ-৯ অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এসব দেখে ভারত কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়ে।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘পাকিস্তানের একটি জে-১০ যুদ্ধবিমান ভারতের একটি রাফাল যুদ্ধবিমান (ফরাসি নির্মিত) ভূপাতিত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এইচকিউ-৯ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাও বেশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।’ ক্লার্কের মতে, পাকিস্তান চীনা প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের দক্ষতা মিশিয়ে যে সামরিক প্রস্তুতি দেখিয়েছে, তা ‘ভারতের জন্য বিস্ময়ের কারণ হয়েছে।’

তবে ক্লার্ক বলেন, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের যুদ্ধংদেহী মনোভাব ভারত প্রত্যাশা করেছিল। ‘ভারতের প্রতিক্রিয়ার একটি বড় অংশ ছিল জেনারেল মুনিরকে “শিক্ষা” দেওয়ার প্রয়াস। ভারত দেখাতে চেয়েছে, তারা যেকোনো সময় পূর্ণ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।’

তার কথায়, ‘এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভারত তাদের একটি পশ্চিমা নৌবহরের বিমানবাহী রণতরী দল করাচি উপকূল থেকে মাত্র ৩০০ মাইল দূরে মোতায়েন করেছে। এটি স্পষ্টতই যুদ্ধের হুমকি ছিল, যদি না পাকিস্তান নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে।’

‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি উপায় বের করেছে, যার মাধ্যমে দুই দেশই পিছিয়ে আসতে রাজি হয়েছে’, বলেন ক্লার্ক।

তিনি জানান, ‘উভয় পক্ষই এখন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর কূটনৈতিক উদ্যোগে এই যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হয়েছে।’ তবে ক্লার্কের মতে, ‘এই ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কিছুটা দেরিতে এসেছে।’

ট্রাম্প শনিবার বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণাঙ্গ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। গত চার দিন ধরে উভয় পক্ষের সামরিক স্থাপনায় হামলা-পাল্টা হামলার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও জানান, উভয় দেশ ‘অবিলম্বে কার্যকর’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এটি ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে কার্যকর হয়েছে।’

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সর্বশেষ এই ধাপ শুরু হয় ৭ মে, যখন ভারতীয় সীমান্ত হামলায় পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী কমপক্ষে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এর প্রতিশোধে পাকিস্তান ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাঁচটি যুদ্ধবিমান (তিনটি রাফালসহ) এবং ডজনখানেক ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে।

শনিবার ভোরে পাকিস্তানের একটি বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় হামলার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাল্টা হামলা চালায়। পাকিস্তান দাবি করেছে, জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের আদমপুর বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূল্য প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এটি ভারতের সবচেয়ে আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়।


শীর্ষনিউজ/ইমরান